চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি

একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষণ কার্যক্রমকে সমৃদ্ধ করার জন্য লাইব্রেরির ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষার্থীরা কেবল পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং লাইব্রেরির মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে অতিরিক্ত জ্ঞান অর্জন করে। চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা, গবেষণামূলক চিন্তা ও সৃজনশীলতা বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।

লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা

একটি বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি হলো জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। এর গুরুত্ব হলো—

  • শিক্ষার্থীর পাঠাভ্যাস তৈরি করা

  • অতিরিক্ত জ্ঞান অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা।

  • সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও ধর্ম বিষয়ে গভীরতা বৃদ্ধি করা

  • গবেষণামনস্কতা ও সৃজনশীলতা গড়ে তোলা।

  • নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ তৈরি করা।

চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরির অবস্থান ও পরিবেশ

লাইব্রেরিটি বিদ্যালয়ের শান্ত একটি কক্ষে অবস্থিত। কক্ষটি প্রশস্ত, আলোকসজ্জা ও বাতাস চলাচলের উপযোগী। এখানে রয়েছে—

  • কাঠের বইয়ের আলমারি

  • পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিল

  • লাইব্রেরিয়ান ডেস্ক

  • ভবিষ্যতে সংযুক্ত হওয়ার মতো ডিজিটাল ব্যবস্থা

শিক্ষার্থীরা নিরিবিলি পরিবেশে বসে বই পড়তে পারে।

বইয়ের সংগ্রহ

চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যায়—

  • পাঠ্যপুস্তক (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান)

  • বাংলা ও বিশ্বসাহিত্যের গল্প-উপন্যাস

  • কবিতা ও সাহিত্যকর্ম

  • জীবনী ও স্মৃতিকথা

  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক বই

  • ধর্মীয় বই

  • অভিধান, মানচিত্র ও বিশ্বকোষ

  • শিশুসাহিত্য

এছাড়া শিক্ষার্থীরা পত্রিকা ও ম্যাগাজিন থেকেও সমসাময়িক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে।

শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরি ব্যবহার

লাইব্রেরি প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকে। নিয়ম হলো—

  1. লাইব্রেরি কার্ডের মাধ্যমে বই ধার নেওয়া যায়।

  2. নির্দিষ্ট সময়সীমায় বই ফেরত দিতে হয়।

  3. বইয়ের যত্ন নিতে হয়, নষ্ট করলে ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।

  4. লাইব্রেরিতে নীরব পরিবেশ বজায় রাখতে হয়।

শিক্ষকদের লাইব্রেরি ব্যবহার

শিক্ষকরা নিয়মিত লাইব্রেরি ব্যবহার করে পাঠ প্রস্তুতি, গবেষণা, রেফারেন্স এবং শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেন।

সহপাঠ কার্যক্রমে লাইব্রেরির ভূমিকা

চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি বিভিন্ন সহপাঠ কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। যেমন—

  • পাঠচক্র ও সাহিত্য আসর

  • রচনা ও প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা

  • বইমেলা আয়োজন

  • কুইজ ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা

এসব কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও মননশীলতা বাড়ায়।

ডিজিটাল লাইব্রেরি উদ্যোগ

বর্তমান যুগে ডিজিটালাইজেশনের সাথে তাল মিলিয়ে বিদ্যালয়টি লাইব্রেরিকে আধুনিকায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

  • ই-বুক সংগ্রহ

  • অনলাইন রিসোর্স সংযোজন

  • শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটের লিংক

  • কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সুবিধা

লাইব্রেরির উপকারিতা

চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সুফল হলো—

  1. নিয়মিত পাঠাভ্যাস তৈরি হয়।

  2. জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়।

  3. পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়।

  4. সাহিত্যিক ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায়।

  5. শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীল ও সৃজনশীল হয়ে ওঠে।

বিদ্যমান সমস্যা

যদিও লাইব্রেরি সমৃদ্ধ, তবুও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে—

  • বইয়ের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় কম।

  • আধুনিক প্রযুক্তি সম্পূর্ণভাবে যুক্ত হয়নি।

  • প্রশিক্ষিত লাইব্রেরিয়ান নেই।

সমাধান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

  • নতুন বই সংগ্রহ ও দান কর্মসূচি চালু করা।

  • ডিজিটাল লাইব্রেরি ব্যবস্থা চালু করা।

  • প্রশিক্ষিত লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ।

  • শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরি ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান।

পরিশেষে, চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি কেবল একটি বইয়ের ভাণ্ডার নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, সৃজনশীলতা ও চরিত্র গঠনের কেন্দ্রবিন্দু। নিয়মিত উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে এটি দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যালয় লাইব্রেরি হয়ে উঠতে পারে।

ধন্যবাদান্তে-
মোঃ আতাউল গনি
সহকারি শিক্ষক
চেংনা উচ্চ বিদ্যালয়
কাপাসিয়া,গাজীপুর

Scroll to Top